সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০২২

স্বর্ণমালা গাঁথি বর্ণমালা দিয়ে

আমি সাধারণত শিশুদের জন্য কিছু লেখি না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কেন যেন মনে হচ্ছে আমার শিশুদের জন্য কিছু লেখা উচিত। একটা জাতির কাছে যেতে হলে প্রথমে শিশুদের কাছে পৌঁছাতে হয়। আমি চাই, যে শিশু কেবল বর্ণমালা শিখবে সেও আমাকে জানুক। জানুক, আনন্দ লাভ ব্যতীত শিক্ষার আসলে কোনো উদ্দেশ্য নেই। আর শিশু শিক্ষার আনন্দের অন্যতম অনুষঙ্গ ছড়া। আমি বিশ্বাস করি, ছড়া সাহিত্য মূলত টিকিয়ে রেখেছে শিশুরাই। আপনি হয়তো এই জীবনে অনেক কিছুই পড়েছেন কিন্তু একটু ভেবে দেখুন তো সেইসব বিষয়ের কোনটাই বা আপনার স্মরণে আছে?

আপনার হয়ে আমি হলফ করে বলতে পারি কিছু থাক বা না থাক সেই মুখে বুলি ফোটার সময়ে মায়ের কোলে বসে শোনা ছড়াগুলোর দুচার পঙক্তি আপনি এখনও অনায়াসেই বলতে পারেন। আপনি যদি কোনো কিছু মুখস্থ করেন এবং সেগুলোর নিয়মিত চর্চা না করেন একদিন আপনি ঠিকই ভুলে যাবেন কিন্তু শৈশবে আমাদের পড়া বা শোনা ছড়াগুলো আমরা কেউ মুখস্থ করেনি বরং একধরনের আনন্দ নিয়ে সেটা শিখেছি; আপনার আমার ভেতরকার এই আনন্দই সেটাকে এতদিন বাঁচিয়ে রেখেছে! তাই শিশুদের জন্য “স্বর্ণমালা গাঁথি বর্ণমালা দিয়ে ” শিরোনামে আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। আশা করি, আপনার শিশুও আনন্দ পাবে তবে বিনীত অনুরোধ হলো একসঙ্গে পুরোটা শেখাতে যাবেন না। আনন্দ পেলে সে নিজেই শিখতে চাইবে; তবে ছড়াটি আপনার শিশুর সামনে পাঠ করার সময় একটু সুরে সুরে পাঠ করার চেষ্টা করবেন। মূলত আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করবেন।


ক-তে কলা 

খ-তে খড়

গ-গলা

ঘ-তে ঘর।

শিয়াল ডাকে হুয়াক্কা হুয়ো

শব্দের শুরুতে বসে না উঁয়ো (ঙ)!

শব্দের মধ্যে এবং শেষে

“বাঙালি” এবং “ব্যাঙের” বেশে

(ঙ) উঁয়ো বসে হেসে হেসে।


চ-তে চাবি

ছ-তে ছড়া

জ-তে জল আর

ঝ-তে ঝরা।

সবার কাছে বলে দিয়ো

শব্দের শুরুতে বসে না ইঁয়ো (ঞ)!

কোথায় বসে দেখতে চাই–

এই যে দেখো “মিঞা” ভাই!


ট-তে যে হয় টাকা

ঠ-তে ঠান্ডা

ড-তে ডান্ডা

ঢ-তে হলো ঢাকা।

মূর্ধন্য ণ- বলছে হেঁকে 

মধ্যে এবং শেষে রেখে

“ভণিতা” আপু “বর্ণ” শেখে!

শব্দের শুরুতে বসতে হলে

“ণিজন্ত” ভাই নেয় যে কোলে! 


ত-তে তালা

থ-তে থালা

দ-তে দাদা

ধ-তে ধান

ন-তে নদী, নৌযান!


প-তে পাখি

ফ-তে ফুল

ব-তে বাংলা

ভ-তে ভুল।

ম-তে “মা” হয় দেখতে বেশ

বর্গীয় বর্ণ হলো শেষ!


য-তে যেমন, য-তে যশ

র-তে রাজা, র-তে রস

ল-তে যে হয় লাল

তালব্য শ-তে শাল!

মূর্ধন্য ষ- ভীষণ বেজার

তেড়েহেঁকে আসছে যে “ষাঁড়”।

দন্ত্য স-তে সাথী 

হ-তে যে হয় হাতি!


এরপরের বর্ণগুলো

যেন সবাই পথের ধুলো 

সবাই বসে মধ্যে, শেষে

কেউবা বসে মাথায় এসে!

কে যে কোথায় বসে আর?

চলো দেখি ব্যবহার–

ডয় বিন্দু ড়-তে “গাড়ি”

ঢয় বিন্দু ঢ়-তে “মাঢ়ি”

অন্তঃস্থ অ (য়)-তে “ময়না” 

“দোয়েল” এবং “টিয়া” সব!

খণ্ড ত (ৎ)-তো ভীষণ খুশি

উনি করেন “উৎসব”।


(ং) অনুস্বারে-কিংবদন্তি 

(ঃ) বিসর্গটার “দুঃখ” তাই

“চাঁদ” মামার মাথার ওপর

( ঁ ) চন্দ্রবিন্দু দেখতে পাই।


তৌফিক ওমর

১৮ জুলাই, ২০২২।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

স্বর্ণমালা গাঁথি বর্ণমালা দিয়ে

আমি সাধারণত শিশুদের জন্য কিছু লেখি না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কেন যেন মনে হচ্ছে আমার শিশুদের জন্য কিছু লেখা উচিত। একটা জাতির কাছে যেতে হলে প্রথ...